Archive | December 2016

৫৪ তম পর্ব। কী আবিস্কার করিয়া Yoshinori Oshumi ২০১৬ সনে মেডিসিন অথবা ফিজিওলজীতে নোবেল বিজয়ী হলেন? আপনি কি একটা সুস্থ দীর্ঘায়ূ জীবন পেতে ইচ্ছুক?(১)

৫৪ তম পর্ব কী আবিস্কার করিয়া Yoshinori Oshumi ২০১৬ সনে মেডিসিন অথবা ফিজিওলজীতে নোবেল বিজয়ী হলেন? আপনি কি একটা সুস্থ দীর্ঘায়ূ জীবন পেতে ইচ্ছুক?

1

চিত্র-১

Source of figure- http://www.bbc.com/news/health-37540927

বিজ্ঞানী Yoshinori Ohsumi

 

Born: 1945, Fukuoka, Japan

Affiliation at the time of the award: Tokyo Institute of Technology, Tokyo, Japan

Prize motivation: “for his discoveries of mechanisms for autophagy”

Prize share: 1/1

বিষয়টি সহজে বুঝার জন্য নীচের লিংকে গিয়ে পূর্ববর্তী পর্বগুলী একবার দেখে নিন-

১৬ তম পর্ব

১৭ তম পর্ব (স্নায়ূ কোষ)

১৮ তম পর্ব (স্নায়ূ কোষ)

লাইছোজোম এর আবিস্কার-

১৯৫০ দশকের মাঝামাঝি বিজ্ঞানীরা দেখতে পেলেন কোষের অভ্যন্তরে Cytosol এ (কোষের সাইটোপ্লাজম এর হালকা তরল জলীয় অংস যার মধ্যে কোষের নানান রকম পদার্থ থাকে) এক ধরনের অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠ (Organelle) রয়েছে, যার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের এনজাইম ও আছে। এই ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠ গুলী এই এনজাইম দ্বারা কোষের আভ্যন্তরীন অপ্রয়োজনীয় অকেজো শর্করা, প্রোটীন ও চর্বী ভেঙ্গে পরিপাক করে ফেলে নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারে। বিজ্ঞানীগন তখন এই প্রকোষ্ঠটির (Organelle) নাম দেন Lysosome (লাইছোজোম)।

এই আবিস্কারের ফলে বেলজিয়ান বিজ্ঞানী Christian de Duve ১৯৭৪ সনে নোবেল বিজয়ী হন।

এখানে দেখা গেল কোষ তার Cytosol এর মধ্যে Vesicle বা ব্যাগ তৈরী করে এর মধ্যে কোষের অপ্রয়োজনীয় পদার্থ গুলী তার মধ্যে ভর্তী করে লাইছোজোম কে সরবরাহ করে। এই ব্যাগের নাম দিলেন ‘Autophagosome”. এরপর লাইছোজোম এই পদার্থগুলীকে ভেঙ্গে ব্যবহার করে।

১৯৭০-১৯৮০ এর দশকের দিকে বিজ্ঞ্যানীগন আর একটা পদ্ধতি আবিস্কার করিলেন যার মধ্য দিয়ে কোষ অনাকাংখিত প্রোটীন কে  Proteasome (11) এর মাধ্যমে পরিপাক করে ব্যবহার করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় Prteasome, Ubiquitin নামক প্রোটীনকে অপ্রয়োজনীয় প্রোটীনকে ট্যাগ মারার জন্য লাগিয়ে দেয়। তারপর সেই অ্রপ্রয়োজনীয় প্রোটীনকে Proteasome এর আভ্যন্তরীন Degradation চেম্বারে লয়ে ভেঙ্গে ফেলে।  কোষের এই প্রকৃয়াকে “Ubiquitin-mediated-protein degradation” (৯) বলে।  কোষ এই প্রক্রিয়ায় এক একটা প্রোটীনকে পৃথক পৃথক ও যথাযথ ভাবে ভেঙ্গে ব্যবহার করতে পারে। এই আবিস্কারের ফলে Aaron Ciechanover, Avram Hershko ও Irwin Rose ২০০৪ সালে ফিজিওলজী অথবা মেডিসিনে নোবেল প্রাইজ অর্জন করেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় বড় ধরণের প্রোটীন কী ভাবে Degrade বা ভাঙ্গা হয় তার সন্ধান দিতে পারেনা। বড় ধরনের প্রোটীন কোষ “Autophagosome” বা ব্যাগ  তৈরী করে এর মাধ্যমে এনে ভেঙ্গে ব্যবহার করে। (১) চিত্র-৪

2

Figure source- http://waynesword.palomar.edu/lmexer1a.htm

চিত্র-২, the cross section of a general (unspecialized) animal cell.

চিত্র-২ একটি প্রাণী-কোষের সাধারণ চিত্র। একটি পূর্ণ বয়স্ক মানব দেহ এরুপ প্রায় ১০০ ট্রিলিয়ন কোষ সমন্বয়ে গঠিত। এগুলী দেখতে হলে উচ্চ শক্তি সম্পন্ন ইলেক্ট্রনিক মাইক্রোপ এর প্রয়োজন হয়।

এই অতিক্ষুদ্র কোষের মধ্যেই রয়েছে আবার বেশ কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠ বা Organelle (চিত্র-২,ও পর্ব ১৬,১৭ ও১৮ দেখুন)।

এরা প্রত্যেকেই দেহের অতি জটিল ও প্রয়োজনীয় ক্রিয়াদি সমাধা করিয়া দেহকে সুস্থ ও জীবিত রাখে। এদের যে কোন একটির কাজকর্মে ব্যাঘাতের সৃষ্টি হলে কোষ অসুস্থ হয়ে যায়। তখন আমরা বড় বড় দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ি এমনকি মৃত্যু ও বরন করি।

বিজ্ঞানী Yoshinori Ohsumi এর আবিস্কারটা ছিল বিশেষ করে এই সমস্ত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠের মধ্যের Lysosome নামক প্রকোষ্ঠটির উপর (চিত্র২দেখুন)

 

তার আবিস্কারটা বুঝবার আগে বুঝার প্রয়োজন লাইছোজোম কী?

 

তাহলে এবার দেখা যাক কী এই লাইছোজোম, আর এর কাজ ই বা কী?

লাইছোজোম কোষের একটি ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠ যা কোষের সাইটোপ্লাজম এর মধ্যে অবস্থান করে।

কী কাজ এর?

 

অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ এর। এর মধ্যে থাকে বেশ কিছু এনজাইম যা শর্করা, প্রোটীন, Fat (চর্বী),জীবানু যাতীয় পদার্থকে ভেঙ্গে ক্ষুদ্রতিক্ষুদ্র মৌলিক অংসে পরিণত করে ফেলতে পারে। যেমন শর্করা ভেঙ্গে এর মৌলিক পদার্থ গ্লুকোজ, প্রোটীন কে ভেঙ্গে এমিনো এসিড ও Fat কে ভেঙ্গে Fatty Acid করে।

 

এটা কখন করে? কেন করে? কী ভাবে করে?

 

এদের এই কাজের উদ্যেশ্যও যেমন নানান ধরনের তেমনি এদের কাজের ও রয়েছে কয়েক প্রকারের পদ্ধতি। এ পর্যন্ত ৪ প্রকারের পদ্ধতির কথা বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন।(ভিডিও-৯) যেমন-

১) Macroautophagy-এই পদধতিতে কোষ Autophagosome (ব্যাগ) তৈরী করে বড় বড় পদার্থ গুলী কোষের ছাইটোছোল (Cytosol) এর মধ্য হতে বহন করে লাইছোজোম এর মধ্যে এনে ঢুকায়। বয়োবৃদ্ধির সংগে সংগে এই পদ্ধতিটা অকার্যকর হয়ে আসতে থাকে।(চিত্র-৮)

২) Microautophagy- এই পদ্ধতিতে কোষের ক্ষুদ্র পদার্থগুলী Vacuole বা ছোট ব্যাগের মধ্যে করে  লাইছোজোমের প্রাচীর মধ্য দিয়ে সরাসরি ভিতরে ঢুকে যায়। এটা বৃদ্ধ বয়স কালেও চলতে থাকে। (চিত্র-৮)

৩) Chaperone- Mediated- Autotophagy বা CMA- এটা একটা বিশেষ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে কোষের Chaperone নামক একটি প্রোটীন অকেজো পদার্থটাকে  বিশেষ প্রকৃয়ায় চিনে ফেলে। তখন সেই অকেজো পদার্থটাকে আটকিয়ে ধরে টানতে টানতে লয়ে গিয়ে লাইছোজোম কে ছোপর্দ করে।  এই পদ্ধতিটাও বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত চলতে থাকে।(৪)

৪) Endosomal microautophagy বা E microautophagy- এই পদ্ধতিটা সম্প্রতি (২০১৩) বিজ্ঞানীগন আবিস্কার করেছেন। এই পদ্ধতিতে কোষ সরাসরি ছোট ছোট Endosome বা ব্যাগের মত তৈরী করে তার মধ্যে অপ্রয়োজনীয় পদার্থগুলী ঢুকিয়ে লয়।  ভিডিও- ৯ দেখুন। (চিত্র-৮)

 

কোষের এই কাজটির নাম বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন “Autophagy”. Auto অর্থ নিজে নিজে আর Phagy অর্থ খাওয়া। অর্থাৎ কোষ লাইছোজোমের দ্বারা কোষের নিজস্ব পদার্থ নিজে নিজেই খেয়ে ফেলে।

 

এবার দেখা যাক কোষ তাহলে কী কী বস্তু খেয়ে ফেলে ও কেন খায়?

 

১। কোষের অভ্যন্তরে কোন জীবানু  বা ভাইরাছ ঢুকে পড়লে,এগুলীকে খেয়ে ফেলে শরীরকে জীবানুমুক্ত রাখে।

২। কোষের সাইটোছোলের (Cytosol)  অভ্যন্তরে কোন মেয়াদোত্তীর্ণ বা অকেজো বা অপ্রয়োজনীয় প্রোটীন, শর্করা, চর্বী, বা যে কোন ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠ যেমন মাইটোকন্ড্রিয়া, লাইছোজোম,Free Radical ইত্যাদি অকেজো হয়ে  অপ্রয়োজনীয় ভাবে জমা হয়ে পড়ে থাকলে তা Autophagy পদ্ধতির মধ্যদিয়ে ভেঙ্গে চুরমার করে, কোষকে আবর্জনা মুক্ত করে, এর দ্বারা শরীরের নূতন ব্যবহার যোগ্য পদার্থ উৎপাদন করে কোষকে ও দেহকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখে ও একে ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদন ও করে।এই পদ্ধতির মধ্য দিয়ে ভ্রুণ (Embryo) ও  শিশুর কোষ বিষষয়ী করণ, ও বর্ধন ও হয়।

অর্থাৎ ডবল কাজ করে- একদিকে কোষ তার নিজ আবর্জনামুক্ত করে, অপরদিকে সেই আবর্জনাকে আবার Recycling করে পুনরার শরীরের নানাবিধ কাজে লাগায়।

যেমন ধরুন আমাদের বাড়ীতে আগাছায় ভর্তি হয় গেল, আমরা সেই আগাছা বা জমাকৃত গাছের পত্রাদি পরিস্কার করে ও একত্র করে জৈব সারে পরিনত করে আবার প্রয়োজনীয় উৎপাদন শীল উপকারী গাছের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করে নানাবিধ ফলাদি, ও খাদ্য দ্রবাদি উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করে থাকি।

বুদ্ধি ও কৌশলটা চমৎকার!! এক ঢিলে দুই পাখি।

তাহলে কোষ এই ভাঙ্গা চূর্ণ বিচূর্ণ পদার্থ গুলী শেষ পর্যন্ত কী করে?

জী হ্যা, এই শেষ পর্যায়ের মৌলিক পদার্থ গুলী যেমন,শর্করা হতে গ্লুকোজ, প্রোটীন হতে এমিনো এসিড, ফ্যাট হতে ফ্যাটি এসিড,  এগুলী দীর্ঘক্ষন অতিরিক্ত ক্ষুধার সময় কোষ  নিজে ব্যবহার করে শরীরের শক্তি উৎপাদন করে, এমিনো এসিড হতে পুনরায় নূতন প্রোয়োজনীয় প্রোটীন নির্মান করে,শক্তি ও সরবরাহ করে, এটা কে এমন ঘটনার সংগেও উপমা দেওয়া যায়, যেমনটা আমাদের গৃহে ভাঙ্গা ও ব্যবহারের অযোগ্য আসবাব পত্র Recycling করার জন্য Recycling Carrier এ দিয়ে দেই। পরে Manufacturer রা এই ভাঙ্গা আসবাব পত্র দ্বারাই সুন্দর সুন্দর নূতন মাল জিনিষ তৈরী করে।

ঠিক এভাবেই আমরা যদি আমাদের গৃহের নিত্ত নৈমিত্তিক উৎপাদিত অপ্রয়োনীয় বস্তু যদি পরিস্কার না করি, তাহলে যেমন অচিরেই আমাদের গৃহ বসবাসের অযোগ্য হয়ে গিয়ে সব কিছু অচল হয়ে পড়বে, তেমনি ভাবেই লাইছোজোম যদি কোন কারণে কোষের জমাকৃত অপ্রয়োজনীয় পদার্থ পরিস্কার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে কোষ ও যেমনটা অসুস্থ হয়ে যাবে একই সংগে আমরাও তেমন বড় বড় দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে যাব, যেমন Parkinson, Huntington, Alzheimer’s, Obesity, Osteoporosis, Diabetes and Cancer. ইত্যাদি (ভিডিও-৭  দেখুন)

কিসে Autophagy আরম্ভ হতে উত্তেজিত করায়?

উত্তর- দীর্ঘক্ষন অত্যধিক ক্ষুধা বা উপোশ, পরিমানে কম খাওয়া, কম ক্যালরীর খাদ্য (চর্বি ছাড়া) খাওয়া,শারিরীক শ্রম করা ও নিয়মিত নিদ্রা Autophagy  হতে উত্তেজিত করায়। অতএব শরীরকে ক্ষুধা বা উপোশ ভোগ করানোতে দীর্ঘ সুস্থ জীবন আনয়ন করায়।

আপনি কী দীর্ঘ সুস্থ জীবন কামনা করুন?   তাহলে আপনার কোষগুলীকে যথাযথ ভাবে Autophagy করার সুযোগ দান করে কোষকে সুস্থ ও সক্ষম রাখুন এবং আপনিও দীর্ঘদিন ধরে সুস্থ ও সক্ষম থাকুন। এটা একেবারে সোজাসুজি হিসাবের কথা। এর ভিতর কোন মারপ্যাচ বা জটিলতা নাই।

কিসে Autophgy ব্যহত করায়?

অত্যধিক খাওয়া, ঘন ঘন খাওয়া, উচ্চ ক্যালরী সম্পন্ন খাদ্য (যেমন Fat) খাওয়া, এক নাগাড়ে দীর্ঘক্ষন বসে থাকার কাজে থাকা, এর সংগে সংশ্লিষ্ট জ্বীন সমূহের কোন একটি Mutation (পরিবর্তন) ঘটা,(প্রায় ৩৫টা জ্বীন Autophagy এর বিভিন্ন স্তরের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটীন Encode করে থাকে) ও বার্ধক্য।(চিত্র-৭, একটি Autophagy সম্পর্কিত জ্বীন এর অবস্থান দেখানো হয়েছে)

কী ভাবে ডিএনএ প্রোটীন Encode করে তৈরী করায় তা, ১১তম পর্বে

দেখুন—

কোষ কী ভাবে এই অপ্রয়োজনীয় পদার্থ গুলী সাইটোছোল এর বিভিন্ন স্থান হতে সংগ্রহ করে লাইছোজোম এর মধ্যে আনয়ন করে?

উত্তর- ঠিক আমরা যে ভাবে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ গুলী আগে চিহ্নিত করে একত্র জড় করে ফেলি ও পরে  সেগুলী একটি ব্যাগ এর মধ্যে ঢুকিয়ে ব্যাগের মুখটি ভাল করে এটে দিয়ে রিসাইকেল ক্যান এর মধ্যে ঢুকিয়ে দেই, কোষ ও ঠিক একই পদ্ধতিতে কাজ করে।

তাহলে কোষ আবার কোথা হতে এই ব্যাগ সংগ্রহ করে,বুঝলাম  আমরা না হয় পলিথিন ব্যাগ তৈরী করে নিতে পারি?

উত্তর- কোষ ডবল Membrane (পর্দার) এর দ্বারা Vesicle বা ব্যাগ তৈরী করে ফেলে। বিজ্ঞানীদের ধারনা কোষ এই ডবল মেমব্রেন Endoplasmic Reticulum বা Plasma Membrane ( কোষ প্রাচীর) হতে লয়ে লয়। Autophagy এর অনেক কিছু এখনো বিজ্ঞানীদের নিকট পরিস্কার নয়।

কোষের এই ব্যাগকে “Autophagosome” বলা হয়। কোষ জমাকৃত অপ্রয়োজনীয় পদার্থ গুলীর চতুর্দিক হতে এই ব্যাগ নির্মান করে এনে জমাকৃত অপ্রয়োজনীয় পদার্থ গুলীকে ভাল করে ঘিরে আটকিয়ে ফেলে। এরপর এই অপ্রয়োজনীয় মাল ভর্তী এই ব্যাগকে এবার বহন করে  লাইছোজোম কে তুলে দেয়।(চিত্র-৩,৪,৬)

এই স্তরের কাজকে বলা হয় “Recognition of Cargo”. অর্থাৎ Autophagosome বা ব্যাগটিকে ঐ  অপ্রয়োজনীয় স্তুপাকৃত পদার্থ গুলীকে সঠিক ভাবে চিনবার ক্ষমতা থাকতে হবে যে, কোন্ মালটি তার মধ্যে ঢুকাতে হবে, আর কোন মাল তার মধ্যে ঢুকাতে হবেনা।

যদি কোন ত্রটি বিচ্যুতির কারণে তার লক্ষ্য বস্তুকে চিনতে না পারে  তা হলে কাজ ব্যর্থ হয়ে যায়। এর সংগে সংশ্লিষ্ট কোন  জ্বীন এর মিউটেশন বা অত্যধিক বয়োবৃদ্ধির কারণে এটা ঘটতে পারে।

( কী ভাবে জ্বীন মিউটেশন হয় তা জানতে পড়ুন ১২ তম পর্ব

তখন সেই ব্যক্তি বড় বড় জটীল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়বে।

এরপর মাল ভর্তি করার পর এটাকে বহন করতে হবে।

এই স্তরের কাজ ব্যহত হলে যে রোগ হয় তাকে- Huntington disease বলে।  যে জ্বীনটা মালামাল ভর্তির পর ব্যাগটিকে ভাল করে এটে দেয়, সেই জ্বীনে Mutation (পরিবর্তন) হলে , ব্যাগটি টাইট করে আটকাতে পারেনা। ফলে মাল বহন করার সময় মালামাল ব্যাগ লিক করে বেরিয়ে যায়। ফলে Autophagy ব্যহত হয়ে তখন এই ব্যক্তি মারাত্মক Huntington disease-  রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। (ভিডিও-৭)

কী ভাবে কোষ এই মালামাল ভর্তি ব্যাগকে লাইছোজোম পর্যন্ত বহন করে?

হ্যা, কোষ এই কাজটি করায় কোষের  “Cytoskeleton” এর  “Microtubule” ও তার “Motor protein” (পরিচালক প্রোটীন) দ্বারা।

এই Microtubule ও Motor Protein  যে জ্বীন তৈরী করায় সেই জ্বীন এর মিউটেশনের ঘটিলে এই পরিবহন কাজ বাধা গ্রস্থ হয়ে যায়। ফলে Autophagy হতে বিঘ্ন হয়ে মারাত্মক মারাত্মক ব্যাধির সৃষ্টি হয়।

এরপর এই মাল ভর্তী ব্যাগ লাইছোজোম পাওয়ার সাথে সাথে এই ব্যাগের সংগে মিশে গিয়ে তার দরজা (Receptor) খুলে দিয়ে  অভ্যন্তরীন প্রকোষ্ঠে নিয়ে নেয়।

যে রোগে লাইছোজোম তার দরজা খুলতে সক্ষম হয়না তার নাম Parkinson disease. এই রোগে, যে জ্বীনটা  লাইছোজোম এর দরজা খুলার কাজ করায়, সেটা Mutation হয়ে যায়। ফলে Autophagy ব্যাহত হয়ে ব্যক্তিটি অসুস্থ হয়ে এই জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে যায়।

Alzheimer disease এ ও লাইছোজোম আর একটি জ্বীন Mutation হয়ে গিয়ে মুখ খুলে মালামালের ব্যাগ লাইছোজোমের ভিতরে লইতে ব্যর্থ হয়, ফলে এই মারাত্মক ব্যাধি হয়। তবে এটা আর একটু ভিন্ন ভাবে হয়। (ভিডিও-৭)

লাইছোজোম তার এই প্রকোষ্ঠটি একটি ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা হিসাবে কাজ করে। তার এই প্রকোষ্ঠটি কোষের অপর সাধারন অংসের পরিবেশ হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে তৈরী ও যথোপযুক্ত প্রাচীর নির্মান করে কোষের সাধারণ অংস হতে সম্পূর্ণ পৃথক পরিবেশে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে যাতে লাইছোজোমের আভ্যন্তরীন বস্তু কোষের অন্য অংসের বস্তুর সংগে মিশে একাকার না হয়ে যেতে পারে।

আর যদি তা হতে পারতো তাহলে তো এই পুরাতন অকেজো মালামাল ভাঙ্গাগড়ার কাজ করা সম্ভব হইতোনা এবং আমরাও সুস্থ বা জীবিত থাকতে পারতামনা।

এই লাইছোজোম কারখানার অভ্যন্তরে ভাঙ্গাগড়ার কাজের জন্য কী সেই বিশেষ পরিবেশ ও ব্যবস্থা রয়েছে?

জীহ্যা, এই লাইছোজোমে রয়েছে অতি নিম্ন মাত্রার PH  বা উচ্চ এ্যসিডিটি যার PH ৪-৫ থাকে এবং এর বাইরের PH ৭.২ থাকে। একটি বিশেষ প্রকৃয়ার মাধ্যমে এই নিম্ন PH ও উচ্চ মাত্রার এসিডিটি  বজায় রাখা হয়।(ভিডিও-২)

লাইছোজোমের এই উচ্চ মাত্রার এসিডিটি লইছোজোমের প্রাচীর বিদির্ণ করে যদি কোষের সাধারন অংশে ছড়িয়ে একাকার হয়ে যেতে পারত, তাহলে আমরা বা কোন প্রানী কেহ সুস্থ বা জীবিত থাকতে পারতামনা। জীব জগৎ অচল হয়ে যেত।

আর এই কারখানায় প্রোটীন,ফ্যাট Degrade বা ভাঙ্গার প্রয়োজনে বেশ কিছু রাসায়নিক এনজাইম এর যেমন,Hydrolase, Protease, Lipase ইত্যাদি  দরকার হয়। এসব পদার্থ ও এখানে বিদ্যমান রয়েছে।

অতএব এভাবে লাইছোজোম তার কারখানায় নির্বিঘে কাজ চালিয়ে আমাদের অজান্তেই নিরন্তর আমাদেরই জীবনের সুস্থতা ও রক্ষনাবেক্ষনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, সেই Embryo এর গঠন এর আরম্ভ হতে মৃত্যু পর্যন্ত।

ধন্যবাদ লইছোজোমকে।

তাহলে বিজ্ঞানী  Yoshinori Oshumi  এর আবিস্কার বা অর্জনটা লাইছোজোম এর উপর কোন খানে?

হ্যা, একই পর্বে সবটুকু দিতে গেলে পাঠকদের উপর চাপের সৃষ্টি হইতে পারে এজন্য এটা আগামী পর্বে দেওয়া হইবে।

অনুগ্রহ করে সে পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

 

3

চিত্র -৩

Source of figure- https://www.nobelprize.org/

Source of figure- https://www.nobelprize.org/nobel_prizes/medicine/laureates/2016/press.html

এই চিত্রে দেখানো হয়েছে কী ভাবে  কোষ “Autophagosome (ব্যাগ) তৈরী করে অপ্রয়োজনীয় বস্তুকে চতুর্পার্শ হতে ঘিরে ফেলে লাইছোজোম এর সংশ্পর্শে লয়ে যাচ্ছে।

4

চিত্র-৪

Figure source- https://www.nobelprize.org/nobel_prizes/medicine/laureates/2016/press.html

এই চিত্রে ও দেখানো হয়েছে কী ভাবে  কোষ “Autophagosome (ব্যাগ) তৈরী করে অপ্রয়োজনীয় বস্তুকে চতুর্পার্শ হতে ঘিরে ফেলে লাইছোজোম এর সংশ্পর্শে লয়ে যাচ্ছে।

5

চিত্র-৫

Figure source- https://www.nobelprize.org/nobel_prizes/medicine/laureates/2016/press.html

igure 5: In yeast (left panel) a large compartment called the vacuole corresponds to the lysosome in mammalian cells. Ohsumi generated yeast lacking vacuolar degradation enzymes. When these yeast cells were starved, autophagosomes rapidly accumulated in the vacuole (middle panel). His experiment demonstrated that autophagy exists in yeast. As a next step, Ohsumi studied thousands of yeast mutants (right panel) and identified 15 genes that are essential for autophagy.

এই চিত্রে  বিজ্ঞানী Ohsumi এর পরীক্ষা ও অর্জনটা দেখানো হয়েছে। পরবর্তী পর্বে এর বর্নণা দেওয়া হইবে।

6

চিত্র-৬

Figure source- https://www.nobelprize.org/nobel_prizes/medicine/laureates/2016/press.html

এই চিত্রে দেখানো হয়েছে কী জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে Autophagosome (ব্যাগ) এর বিভিন্ন অংশ লক্ষ্য ব্স্তুর ( অপ্রয়োজনীয় পদার্থ) চতুর্পার্শে তৈরী হয়ে যাচ্ছে।

An Autophagy gene in human, ATG16L1: autophagy related 16 like 1

Cytogenetic Location: 2q37.1, which is the long (q) arm of chromosome 2 at position 37.1

Molecular Location: base pairs 233,251,571 to 233,295,674 on chromosome 2 (Homo sapiens Annotation Release 108, GRCh38.p7) (NCBI)

7.png

চিত্র-৭

https://ghr.nlm.nih.gov/gene/ATG16L1

Figure source-    https://ghr.nlm.nih.gov/gene

এই চিত্রে Autophagy এর ATG  জ্বীন এর অবস্থান ক্রোমোজোমে- ২ এ  দেখানো হয়েছে।

8

চিত্র-৮

Source of figure (ভিডিও-৯)-  https://www.youtube.com/watch?v=BiwnJtYCuww&t=50s

এই চিত্রে দেখানো হয়েছে ১) Macroautophagy. ২) Microautophagy. ৩) E.Microautophagy.

অন্যান্য পর্ব সমূহ এখানে দেখুন-http://www.chkdr02.wordpress.com

YOU TUBES

‘Self-Eating Cell’ Research Wins Nobel in Medicine

  1. https://www.youtube.com/watch?v=Ws0mOmfC9EU

SHOMUS BIOLOGY

  1. https://www.youtube.com/watch?v=H5LCHc7_i2I

SENS FOUNDATION

Autophagy and Intracellular Aggregates – Dr. Ana Maria Cuervo

  1. https://www.youtube.com/watch?v=SvdaiGA9d2s

TRIALPLANNER

  1. https://www.youtube.com/watch?v=Y8ndPSxSNMY
  2. Pi3K

https://www.youtube.com/watch?v=TYZKYrw9rU8

6 PI3K

https://www.youtube.com/watch?v=ewgLd9N3s-4

  1. Einstein On: Autophagy, Dr. Ana Maria Cuervo

https://www.youtube.com/watch?v=DdU5Wwn6vlk

  1. Promoting autophagy with the aid of therapeutic fasting for brain cancer management

https://www.youtube.com/watch?v=gDeQG9DNB1c

  1. Selective autophagy in the fight against aging and age-related disorders

https://www.youtube.com/watch?v=BiwnJtYCuww&t=50s

  1. How To Increase Autophagy

https://www.youtube.com/watch?v=piTFS4MOO4A

References-

  1. https://www.nobelprize.org/nobel_prizes/medicine/laureates/2016/press.html
  2. http://www.bbc.com/news/health-37540927
  3. http://genesdev.cshlp.org/content/21/22/2861.long
  4. https://en.wikipedia.org/wiki/Autophagy
  5. https://en.wikipedia.org/wiki/Nobel_Prize_in_Physiology_or_Medicine
  6. ATG GENES

http://www.tandfonline.com/doi/abs/10.4161/auto.3595

7. ATG16L1 gene

autophagy related 16 like 1

https://ghr.nlm.nih.gov/gene

  1. https://ghr.nlm.nih.gov/gene/ATG16L1
  1. UBIQUITIN

https://en.wikipedia.org/wiki/Ubiquitin

  1. 1992 publication

https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/1400575

11.PROTEASOME

https://en.wikipedia.org/wiki/Proteasome